ইসরায়েলি ড্রোনে বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের নজরদারি

ইসরায়েল থেকে আমদানি করা অসংখ্য ড্রোন বাংলাদেশ সীমান্তে মোতায়েন করেছে ভারত। এসব ড্রোন দিয়ে সীমান্তে নজরদারি জোরদার করার দায়িত্ব পেয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। ড্রোনগুলো মোতায়েন করা হয়েছে মেঘালয় থেকে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার পর্যন্ত দীর্ঘ সীমান্ত এলাকায়।

ভারতীয় গণ মাধ্যম দ্য হিন্দু’র সোমবারের এক অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সীমান্তে সব ধরনের চোরাকারবার ও পাচার বন্ধে এমন কঠোর নজরদারির পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। তবে কতটি ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে কিছু জানায়নি বিএসএফ।

আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত সংযোগ রয়েছে ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটারের। আসামের পশ্চিমাঞ্চলে ধুবরি সেক্টরের ৬১ কিলোমাটির দীর্ঘ সীমান্তে আকাশযান (ড্রোন) ছাড়াও মাটির নিচে পুঁতে রাখা যন্ত্র দিয়েও নজরদারি শুরু করেছে বিএসএফ।

Travelion – Mobile

ইসরায়েল থেকে সম্প্রতি এসব ড্রোন আমদানি করেছে ভারত। বিরতিহীনভাবে দীর্ঘ সময় এগুলো চালু থাকে। যার প্রত্যেকটির দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৩৭ লাখ রুপি। ড্রোনগুলোতে ভিশন ক্যামেরা রয়েছে, যা দিয়ে দিনে কিংবা রাতে মাটির ২ কিলোমিটার উপর থেকে ছবি তোলা সম্ভব।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

হিন্দু’র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া আসামের ওই অঞ্চলটিতে নজরদারি করা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জন্য বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও জটিল রুপ ধারণ করে। ফলে ওই এলাকা দিয়ে অবৈধ পাচার ও চোরকারবার হয় বেশি।

বিএসএফের গোহাটির ইন্সপেক্টর জেনারেল পিযুশ মর্দিয়া বলেন, ‘মূলত সীমান্তের এলাকায় নজরদারি ব্যবস্থা দুর্বল সেসব এলাকা দিয়ে চোরাচালান বেশি হয়। সাধারণত এসব হয় রাতে। এসব ড্রোন মোতায়েন আমাদের নজরদারি সীমাবদ্ধতা দূর করবে।’

তিনি বলেন, ‘ড্রোনগুলো ১৫০ মিটার উঁচু থেকে প্রতিনিয়ত ছবি তুলে পাঠাবে। চোরকারবারিদের সনাক্ত করবে এসব ড্রোন। তবে বিএসএফ বলছে, নজরদারি জোরদারের চেয়েও এর পেছনে বড় পরিকল্পনা হলো, পাচারকারীদের কাছে এই বার্তা পাঠানো যে, তাদের ওপর সব সময় নজর রাখছে বিএসএফ।’

ড্রোনের পাশাপাশি ইসরায়েলের কাছ থেকে থার্মাল ইমেজ সেন্সর প্রযুক্তিও কিনেছে বিএসএফ৷ যার মাধ্যমে মাটি কিংবা পানির নীচে মানুষ, প্রাণী অথবা অন্য কোন জন্তুর উপস্থিতি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে৷ যেসব জায়গায় বিএসএফ সদস্যরা নৌযানের মাধ্যমেও পৌছাতে পারে না সেখানে এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো হবে বলে দ্য হিন্দুকে জানান পীযুষ৷

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পাঁচটি রাজ্যের চার হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে৷ আসামের সাথে ২৬৩ কিলোমিটার সীমান্তের ১১৯ কিলোমিটারই নদীতীরবর্তী৷ তার মধ্যে ৬১ কিলোমিটার জুড়ে বইছে খরস্রোতা ব্রম্মপুত্র৷ এই সীমান্তে নজরদারিকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিএসএফ ৷

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!