ইরানে রানওয়ে থেকে ছিটকে সড়কে উড়োজাহাজ, অক্ষত ১৩৫ যাত্রী!
সকালটা বেশ সৌভাগ্যের ছিল কাস্পিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজের যাত্রীদের জন্য। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ইরানের মাহশাহারে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েও বেঁচে গেল এমডি -৩৩ উড়োজাহাজটির ১৩৫ যাত্রী। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, উড়োজাহাজেটিতে থাকা ১৩৫ যাত্রীর কেউই এই ঘটনায় আহত হয়নি, অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন সবাই।।
ঘটনাস্থলের ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ক্যাস্পিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান উড়োজাহাজটি শহরের ব্যস্ততম সড়কের মাঝখানে অবতরণ করে এবং দুদিকে আটকা পড়ে যানবাহন ও পথচারী।
ইরানের এই দূর্ঘটনাটি জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় কোন দূর্ঘটনা। জানুয়ারির শুরুতে, তেহরানে ইরানি সেনাবাহিনী ভুল করে ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৩৭ কে গুলি করে ভূপাতিত করার ঘটনা সারা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও নতুন এই দূর্ঘটনার সংবাদ কিছুটা আশংকার জন্ম দিলেও, সুখবর হল এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আজকের ঘটনায় ক্যাস্পিয়ান এয়ারলাইন্সের যে উড়োজাহাজেটি দূর্ঘটনায় পড়ে সেটি একটি এম-ডি ৮৩ মডেলের উড়োজাহাজ। প্লেনস্পটনার.নেট এর তথ্য অনুযায়ী, এটি ২৫ বছরেরও বেশি পুরানো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্লাইট রিভিউয়ার স্যাম চুইয়ের মতে, ফ্লাইটটি তেহরান থেকে মাহশাহরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। তার এই কথার সত্যতা মেলে সিএনএনের একটি রিপোর্টেও।
দূর্ঘটনার কিছু চিত্র থেকে দেখা যায় যে উড়োজাহাজেটি উপুড় হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে আছে। দেখে মনে হতে পারে এটি যেন এটির ভুড়িতে ভার দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। ছবি দেখে বোঝা যায় এটি অবতরণের সময় এটির ল্যান্ডিং গিয়ারটি চূর্ণ হয়ে যায়।
দূর্ঘটনার সময় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের একজন প্রতিবেদক উড়োজাহাজটিতে ছিল বলে জানা গেছে। লাইভ মিন্টের খবর অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় টিভির ঔ প্রতিবেদক জানান, “মাহশাহর বিমানবন্দরে পৌঁছে উড়োজাহাজেটি অবতরণে অনেক দেরি করে ফেলে পাইলট। এতে রানওয়ে মিস হয়ে যায়।”
প্রতিবেদক আরো বলেন যে, “উড়োজাহাজের পিছনের চাকাটি ভেঙে গিয়ে সেটি থমকে গিয়েছিল কোনমতে ”
এই ঘটনায় উড়োজাহাজেটি রানওয়ে থেকে ছিটকে একটি রাস্তার উপর এসে পড়ে। ছবিতে দেখা যায় উড়োজাহাজটির কারণে রাস্তাটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে গেছে। দমকল কর্মীরা সেটিতে আগুন না লাগার জন্য এক ধরনের বিশেষ স্প্রে ছিটিয়ে ঢেকে দেয় উড়োজাহাজটিকে। সিএনএন জানিয়েছে যে যাত্রীরা বিমানটি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবগুলো জরুরী বহির্গমন পথই ব্যবহার করেছে।
ইরানের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাটি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। তারা জানুয়ারির শুরুতে ঘটে যাওয়া ইউক্রেন এয়ারলাইনস দুর্ঘটনাটিও তদন্ত করছে। ঔ দূর্ঘটনাটিকে প্রথমদিকে ইরান উড়োজাহাজের যান্ত্রিক গোলযোগ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও পড়ে ভুলবশত সেটিকে গুলি করে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে।