ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

ইতালিতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। করোনা মহামারির ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে আরোপিত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধুমাত্র দূতাবাসের সদস্যদের উপস্থিতিতে সীমিত পরিসরে দূতাবাসে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম দিবসের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) রোমে দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান। এরপরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

দূতাবাসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মূল পর্বের শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা সম্প্রচার করা হয়। এরপর আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথি, কূটনৈতিক কোরের সদস্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দের অনলাইন উপস্থিতিতে দূতাবাসে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত।

Travelion – Mobile

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন ইতালিতে নিযুক্ত হলি সির অ্যাপোস্টলিক নুনসিও ও কূটনীতিক কোরের ডীন মনসাইনিয়র এমিল পল সেরিং, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজাতা, রোমস্থ জাতিসংঘের সংস্থাসমূহে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি থানাওয়াত তিয়েনসিন, রোমস্থ ভারতীয় দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান নীহারিকা সিং, ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া অধিদপ্তরের প্রধান কাউন্সেলর জিয়ানপাওলো নেরি, রোমস্থ লুমসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ফ্রানসেস্কো জানিনি, লা সাপিয়াঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ফাবিও সালপি, মিলানে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ, ইতালির কাতানিয়া, ফ্লোরেন্স, পালারমো, নেপলস শহরে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারেরি কনসাল জেনারেলরা এবং সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত ও বাংলাদেশে বসবাসরত উন্নয়নকর্মী ইতালির নাগরিক ভিসেনজো ফালকোনে।

এছাড়া আলোচনা সভায় ইতালি, ইউরোপের অন্যান্য দেশে বসবাসকারী এবং বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশি রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচকরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং বিগত ৫০ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও বক্তারা বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন এবং দূতাবাসে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও অসাধারণ জীবন সম্পর্কে দর্শনার্থীরা ও নতুন প্রজন্ম জানার সুযোগ পাবেন বলে উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। একই সাথে তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের ভূমিকার কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ে তিনি এ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বৈশিক পরিমণ্ডলে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুজিববর্ষে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্জনের পথে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

আলোচনার শেষপর্বে স্থানীয় সঞ্চারি সংগীতায়নের পরিচালক সুস্মিতা সুলতানার নির্দেশনায় শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে দেশাত্মকবোধক গান ও নৃত্যের ধারণকৃত ভিডিও সম্প্রচারিত হয়, যা সবাইকে মুগ্ধ করে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ইতালির রাষ্ট্রপতি ও সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে এবং মন্টেনিগ্রোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা প্রেরণ করেছেন। রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) মহাপরিচালকও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা প্রেরণ করেছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছে লা সাপিয়াঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগও।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!