অস্ট্রেলিয়ায় যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে নারীদের বিক্ষোভ

যৌন নিপীড়ন ও লিঙ্গবৈষম্যে নিয়ে উত্তাল অস্ট্রেলিয়ায়। ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনায় দেশটিতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে। এ নিয়ে সেখানকার রক্ষণশীল সরকার অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই যৌন নিপীড়ন ও লিঙ্গবৈষম্যে বিরুদ্ধে আজ সোমবার বিক্ষোভ করেছেন হাজারো নারী ।

বার্তা সংস্থা এএফপির। খবরে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার ৪০টির বেশি শহরে ‘দ্য হ্যাশটাগ মার্চ ফর জাস্টিস’ ব্যানারে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বড় বিক্ষোভ হচ্ছে ক্যানবেরায়। দেশটির পার্লামেন্টের ভেতরে এক নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভে অভিযোগকারী ওই নারীও যোগ দেন।

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের বাইরেও বিক্ষোভ হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীদের অনেককে নানা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। যেমন কোনোটিতে লেখা ছিল, ‘আপনারা শুনছেন না’, কোনোটিতে ছিল, ‘আপনারা কতজন ভুক্তভোগীর খবর রাখেন?’ অধিকাংশ বিক্ষোভকারীর পরনে ছিল কালো পোশাক। পার্লামেন্ট ভবনের সামনের বিক্ষোভে অংশ নেয়া মেলবোর্ন থেকে আসা ক্যাথরিন জেমিসন যৌন নিপীড়ন ও বৈষম্য নিয়ে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,‘আমি চাই, সমস্যার গভীরে যাওয়া হোক। যথেষ্ট হয়েছে। অবিলম্বে আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন।’

Travelion – Mobile

চার্লস ক্রিস্টিন পোর্টারের শহর পার্থেও বিক্ষোভ হয়েছে। মেলবোর্নে বিক্ষোভে যোগ দেন প্রায় ১০ হাজার নারী। ক্যানবেরা ও সিডনিতেও কয়েক হাজার নারী বিক্ষোভ করেন।

সাবেক সরকারি কর্মী ব্রিটানি হিগিনস গত মাসে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে একজন মন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সহকর্মী তাঁকে ধর্ষণ করেন। আর চলতি মাসের শুরুর দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান পোর্টার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগটি ছিল, ১৯৮৮ সালে ছাত্র থাকাকালে ১৬ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছিলেন তিনি।

গত সোমবার অস্ট্রেলিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল চার্লস ক্রিস্টিন পোর্টার দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এবিসি নাম প্রকাশ না করে দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আইনজীবীরা বলছেন, প্রতিবেদনটি পড়ে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়।

এ ছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, সম্প্রতি বিরোধী লেবার পার্টির নারী সদস্যরা ফেসবুকে একটি পেজ খুলেছেন। সেখানে পুরুষ সহকর্মী ও রাজনীতিবিদদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরেছেন তাঁরা।

অস্ট্রেলিয়ার সরকার পার্লামেন্টে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পার্লামেন্টে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন ব্রিটানি হিগিনস। বিক্ষোভস্থলে তিনিও এসেছিলেন। ক্যানবেরায় বিক্ষোভকারীদের নিজের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বলেন তিনি। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুরো ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আমাদের লড়াই করে যেতে হবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!