অন্ধকারে পুরো লেবানন, সেনাবাহিনী নেমেছে সহায়তায়
লেবাননে চরম জ্বালানী সঙ্কটের কারণে দেইর আম্মার এবং জাহরানিতে অবস্থিত দেশটির সবচেয়ে বড় দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালানির অভাবে শনিবার বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে পুরো দেশ অন্ধকারে ডুবে যায়।
রবিবার একটি গ্রিড পুনরায় চালু করার জন্য সেনাবাহিনী তাদের কিছু জ্বালানি হস্তান্তর করেছে বলে জানাচ্ছেন লেবাননের জ্বালানি কর্মকর্তারা। এর ফলে তিনদিন বিদ্যুতের সরবরাহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিদ্যুত সরবরাহকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বলছে, তারা এখন আগের মাত্রায় বিদ্যুত সরবরাহ করছে। তবে তারা দিনে শুধুমাত্র এক থেকে দুই ঘণ্টার জন্য বিদ্যুত দিতে পারছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিও বিবৃতিতে বলা হয় এই দুটি উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বিদ্যুতের নেটওয়ার্ক ‘পুরো অচল’ হয়ে যায়। এই দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র একসাথে লেবাননের ৪০% বিদ্যুতের যোগান দিত।
শনিবার গোটা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরো বন্ধ হয়ে যাবার আগেও লেবাননের মানুষ বেশিরভাগ সময়ই দিনে মাত্র দু’ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাচ্ছিলেন। একারণে লোকজনকে নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যয়বহুল বেসরকারি জেনারেটরের ওপর। অন্যদিকে জেনারেটরের ব্যয় বহনে অক্ষম নিম্ন আয়ের লেবানিজ ও প্রবাসীদের মোমবাতি, হ্যারিকেনের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
গত ১৮ মাস ধরে লেবানন বড়ধরনের অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং দেশটিতে জ্বালানির চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
দেশটিতে মুদ্রা সঙ্কট তৈরি হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার ব্যাপক ঘাটতির ফলে বিদেশী জ্বালানি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে জ্বালানি কেনার অর্থও দেশটির কোষাগারে নেই।
লেবাননের অনেক মানুষকে জীবনধারণের জন্য এখন ডিজেল চালিত ব্যক্তিগত জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু জ্বালানি সঙ্কটের ফলে ক্রমশ এসব জেনারেটর চালানোও ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানাচ্ছেন বেসরকারি জেনারেটার সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো।
সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত এসব জেনারেটরও এখন যথেষ্ট নয়। বেসরকারি ভিত্তিতে সরবরাহ চালু রাখতে যারা জেনারেটরের ব্যবসা করেন, তারাও বলছেন – জ্বালানি সঙ্কটের কারণে তাদের সেবাও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।