৩১৪ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারাচ্ছে বিশ্ব এভিয়েশন খাত

আয়াটা'র তথ্য

কোভিড-১৯ ভাইরাস সংকটের কারণে এ বছর বিশ্ব এভিয়েশন খাত ৩১৪ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারাবে, এয়ারলাইন্সের মোট যাত্রী আয় ২০১৯ সালের তুলনায় ৫৫% কমে যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সংস্থা (আয়াটা)-র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য। যদিও তারা গেল ২৪ মার্চে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ২৫২ বিলিয়ন ডলার এভিয়েশন খাত ২৫২ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারাবে বলে ধারণা দিয়েছিল। তখন থেকে বিশ্ব এভিয়েশনের অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হয় যা নিচের বিষয়গুলোতে প্রতিফলিত হয়েছে:

* তিন মাস ধরে অভ্যন্তরীণ রুটে বন্ধ আছে ফ্লাইট চলাচল।
* কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রথম তিন মাস পেরিয়ে আরো বিস্তৃত হয়েছে।
* বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে (যদিও মার্চে আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকাতে এই রোগের প্রকোপ কম থাকায় প্রভাবও কম পড়বে বলে ধরে নিয়ে প্রতিবদেন দিয়েছিল আয়াটা)

Travelion – Mobile

আয়াটার মতে পুরো বছরে যাত্রীদের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ভ্রমণ চাহিদা ২০১৯ এর তুলনায় ৪৮ শতাংশ কমে আসবে। আর এর জন্য দুটি মূল কারণকে তুলে ধরেছে তারা।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পটপরিবর্তন: কোভিড ১৯ এর কারণে বিশ্ব মন্দার দিকে এগোচ্ছে। এই সংকটের সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাতটি আসবে বছরের দ্বিতীয় ভাগে যখন জিডিপি ৬% হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে (বিশ্ব আর্থিক সংকটের তুলনায় এই জিডিপির ২ শতাংশ কম)। আর জিডিপির উপর নির্ভর করেই যাত্রী ভ্রমণের চাহিদা উঠা—নামা করে। বছরের দ্বিতীয় ভাগে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তৃতীয় ভাগে এসে তা ৮ শতাংশ যাত্রী কমাতে ভূমিকা রাখবে।

বিমানবন্দরের রানওয়েতে অলস পড়ে থাকা উড়োজাহাজের সারি।
বিমানবন্দরের রানওয়েতে অলস পড়ে থাকা উড়োজাহাজের সারি।

ভ্রমণ বিধিনিষেধ: ভ্রমণের উপর বিধিনিষেধ ভ্রমণ চাহিদা কমাতে ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রেও সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে বছরের দ্বিতীয় ভাগে। এপ্রিল মাসের শুরুতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ফ্লাইট সংখ্যা ২০১৯ এর তুলনায় ৮০ শতাংশ কম হয়েছে। যদি ধারনা করা হচ্ছে বছরের তৃতীয় ভাগের শুরুতে এসে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীদের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে উর্ধ্বমুখি হবে যদিও আন্তর্জাতিক রুটে সরকারগুলোর নিষেধাজ্ঞায় তা অনেক সময় নিয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করবে।

আয়াটার প্রধান নির্বাহী আলেকজান্ডার ডি জুনিয়াক বলেন “দিন দিন ইন্ডাস্ট্রির সামনের যাত্রাটা অন্ধকারে নিপাতিত হচ্ছে। সঙ্কটের মাপকাঠি বিবেচনা করলে খুব দ্রুত জয়লাভ করার মত কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। বাস্তবে যদিও আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে অভ্যন্তরীণ বাজার দ্রুত ফিরে আসার একটা সম্ভাবনা আছে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি গেল বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও বেশি যাত্রী রাজস্ব হারাতে হবে আমাদের। আর সেই ধাক্কা হবে ৩১৪ বিলিয়ন ডলারের ধাক্কা।”

“যদিও বেশ কিছু সরকার এভিয়েশনের জন্য নতুন এবং সম্প্রসারিত আর্থিক প্রণোদনা ও সহায়তা ঘোষণা করেছে তারপরও পরিস্থিতি সঙ্কটজনক বলা যায়। এয়ারলাইন্সগুলো বছরের দ্বিতীয় ভাগে তাদের ৬১ বিলিয়ন ক্যাশ রিজার্ভ হারাবে যার ফলে এই খাতের ২৫ মিলিয়ন কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে, অনেক প্রতিষ্ঠান পারবেনা এই ধাক্কা সামলাতে,” তিনি যোগ করেন।

বিশ্ব এভিয়েশনে করোনা-ধ্বস, যাত্রী শুন্য বিমানবন্দরের টার্মিনাল
বিশ্ব এভিয়েশনে করোনা-ধ্বস, যাত্রী শুন্য বিমানবন্দরের টার্মিনাল

সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান
বিভিন্ন দেশের সরকারকে তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীল প্যাকেজে এভিয়েশনকে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এয়ারলাইন্সগুলোর উপর নির্ভর করে বিশ্বে ৬৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। প্রতিটি এয়ারলাইন্স কর্মসংস্থানের উপর ভিত্তি করে আরো ২৪ টি কর্মসংস্থান তৈরি হয়।

তাই আয়াটা প্রধানের আহ্বান “এয়ারলাইন্সের জন্য আর্থিক সহায়তা আজ সরকারগুলোর আশু দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। কারণ প্রতিটি এয়ারলাইন্সের চাকরি বিশ্বব্যাপী আরো ২৪ টি চাকরির চেইন তৈরি করে। তাই বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে এয়ারলাইন্সগুলোকে সবল করাটা আমাদের সকলের প্রাথমিক দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত হওয়া দরকার।

আয়াটা সরকারগুলোর জন্য বেশ কিছু সহায়তা বিবেচনায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে:
১. যাত্রী ও কার্গো বাহী বিমানগুলোকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। যাতে কমে যাওয়া রাজস্ব এবং তারল্য সংকট দূর করা যায়।
২. কর্পোরেট বন্ড বাজারের জন্য কেন্দ্রিয় ব্যাংক বা সরকারের ঋণ এবং ঋণের নিশ্চয়তা প্রদান। কারণ কর্পোরেট বন্ড বাজার এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য বিনিয়োগের বড় একটি ক্ষেত্র।
৩. কর মওকুফ ও সুবিধা প্রদান। এক্ষেত্রে কর প্রদানে শর্ত শিথিল করে সরকারগুলোকে এয়ারলাইন্সদের জন্য ছাড় প্রদান করতে হবে। অথবা কর প্রদানের সময়সীমা বাড়িয়ে সাময়িকভাবে টিকেট ট্যাক্স অথবা সরকার আরোপিত কর মওকুফ করা যেতে পারে।

আমি বাড়ি আছি, তুমি বাড়ি থেকাে : চিরকুট

আমি বাড়ি আছি, তুমি বাড়ি থেকােজয় আসবে আমাদের, বিশ্বাস বুকে রেখোইউএনডিপির প্রযোজনায় চিরকুটের করোনা সচেতনতা সংগীত

Posted by AkashJatra on Monday, April 6, 2020

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!