সৌদি এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অস্বীকার
গ্রুপ টিকিট বাতিল না করে জোরপূর্বক বিক্রি করার চাপ দেওয়া; টিকিট বাতিল হওয়ার পরেও রিফান্ডের টাকা ফেরত না দেওয়া; পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ওমরাহ ভিসা বন্ধ-এভাবে এজেন্সিগুলোকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলাসহ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সৌদি এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে।
সৌদি এয়ারলাইন্সে প্রতারণা করছে উল্লেখ করে কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিকরা জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকার ওমরাহ যাত্রীদের গ্রুপ টিকেট সিন্ডিকেট ভাঙার উদ্যোগ নেয়। যা অধিকাংশ এয়ারলাইন্স ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। তারা গ্রুপ টিকেট মুক্ত করে দিলে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকেট নিশ্চিত করে অথবা বাতিল করে টাকা ফেরত পায়। কিন্তু সৌদি এয়ারলাইন্স সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ করে প্রতারণামূলক কৌশল গ্রহণ করে। এতে আমরা ভীষণ ভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছি।
এজেন্সি মালিকরা সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে সাধারণ যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। প্রশাসন, এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি তারা আহ্বান জানান দ্রুত এই সমস্যা গুলোর সমাধান ও এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
গ্রুপ টিকেট বাতিল না করে জোরপূর্বক বিক্রির চাপ: অন্যান্য এয়ারলাইন্স যেখানে গ্রুপ টিকেট বাতিল করে দেয়, সৌদি এয়ারলাইন্স সেখানে এজেন্সিগুলোকে জোর করে গ্রুপ ধরে রাখতে বাধ্য করেছে। নির্ধারিত সময়ের পরও টিকেট বিক্রির জন্য চাপ দিয়েছে।
ওমরাহ ভিসা জটিলতা: সৌদি সরকার পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই ওমরাহ ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীদের ভিসা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন শত শত টিকেট বাতিল হচ্ছে।
টিকেট বাতিল হলে রিফান্ড না দেওয়া: যাত্রীদের ভিসা না থাকলে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী তাদের টিকেটের মূল্য ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু সৌদি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা কোনো রিফান্ড দিচ্ছেন না।
এজেন্সিগুলোকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলা: এজেন্সিগুলো গ্রুপ ধরে রাখতে বাধ্য হওয়ায় এখন তাদের কোটি কোটি টাকা আটকে আছে। যা বিশাল আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ: বহু ওমরাহ যাত্রী তাদের ভিসা ও টিকেট নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। অনেকে টাকা পরিশোধ করেও উড়োজাহাজে উঠতে পারছেন না। এর কোনো সমাধান মিলছে না।
ট্রাভেল এজেন্সি মালিকদের দাবি: সৌদি এয়ারলাইন্সের প্রতারণামূলক নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাতিল হওয়া টিকেটের সম্পূর্ণ রিফান্ড নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। সৌদি এয়ারলাইন্সের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সৌদি এয়ারলাইন্সের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এজিএম (সেলস) শুভ জানান, ‘আসলে আপনাদের কাছে যারা অভিযোগ করছেন তারা সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না। তারা জেনেই টিকিট নিচ্ছেন যে এটি নন রিফান্ডেবল। এটা ফেরত হয় না।’
সৌদি এয়ারলাইন্সের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি থাকবেই। আমাদের যাত্রী নেই, আমরা কাদের অভিযোগ দিবো। তারপরেও ট্রাভেল এজেন্সি মালিকদের কথা চিন্তা করে টিকিটের ডেটগুলো পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে। কুরবানীর ঈদের পর জুলাইয়ের দিকে অনেকেই পরিবর্তন করে নিয়ে যাচ্ছে। যারা নিচ্ছেন না তারা হয়তো চাইছেন না। কেন তারা চাইছেন না আর আপনাদের ভুল তথ্য দিয়ে বেড়াচ্ছে জানি না।’
সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ