সময়মতো করোনা রিপোর্ট না পাওয়ায় বিদেশে যেতে পারেননি অনেকে

স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের অনশনের জের

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক দায়িত্বে না বসতেই করোনা পরীক্ষায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা শুরু করেছেন আমরণ অনশন। এর ফলে বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট সময়মতো দিতে না পারায় অনেক যাত্রীর ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যাঁদের অনেকের জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আগারগাঁওয়ের ল্যাবে গতকাল যখন কাজ না করে আন্দোলন চলছিল, তখন নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। আজ রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি মহাপরিচালক পদে যোগদান করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যাত্রী বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ১১টায় বিদেশগামী হিসেবে রাজধানীর নিপসম সেন্টারে আরো অনেকের মতো আমিও নমুনা দিই করোনা পরীক্ষার জন্য। গতকাল দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পর বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০৪৭ ফ্লাইটে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দুবাই রওনা হওয়ার কথা ছিল। রিপোর্ট না পাওয়ায় আর ওই ফ্লাইটে যেতে পারিনি। আমার মতো অন্যদেরও একই সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’

Travelion – Mobile

সরকার ২৩ জুলাই থেকে আকাশপথে বিদেশ গমনকারীদের জন্য কভিড-১৯ (নেগেটিভ) পরীক্ষার সনদ বাধ্যতামূলক করেছে। বিমানযাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে কোনো নমুনা জমা নেওয়া হবে না এবং ২৪ ঘণ্টা আগে রিপোর্ট ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাংলাদেশি যাত্রী যাঁরা আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে বিদেশে যাবেন তাঁদের শর্ত পূরণসাপেক্ষে বিমানযাত্রার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নির্ধারিত ১৬টি হাসপাতাল/ক্লিনিক/পরীক্ষাগারে নমুনা প্রদান করে ভ্রমণের আগে কভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নিতে হবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘করোনা সনদ নিয়ে শুরু থেকেই ঝামেলা হচ্ছে। ওয়েবসাইটে করোনা সনদ না পেলে আমাদের কিছু করার নেই। এভাবেই আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান বলেন, ‘করোনা সনদ দেওয়ার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। করোনা সনদের বিষয়টি তারা দেখছে। কারো সনদ না থাকলে তিনি যেতে পারবেন না।’ এদিকে করোনা পরীক্ষায় এ ধরনের দায়িত্বহীন কাজকে এভিয়েশন খাতের জন্য বিপজ্জনক মনে করছেন বিমান চলাচল বিষয়ে বিশ্লেষক দ্য বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘এটা কল্পনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার যাত্রী ঢাকা থেকে বিদেশ যান। তাঁদের যদি কভিড পরীক্ষা করতে হয়, তাহলে ঢাকায় মাত্র তিনটি সেন্টার দিয়ে সামাল দেওয়া যাবে না। আর কেন সেখান থেকেই করতে হবে? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদিত ৭০-৮০টি সেন্টার আছে। সেগুলো কেন অনুমোদন দেওয়া হলো না? এই দায় কেন সরকার নিতে গেল?’

সনদের অভাবে যেসব যাত্রী বিদেশে যেতে পারলেন না তার দায় কে নেবে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখছে। টেস্ট করার কোনো সামর্থ্য আমাদের মন্ত্রণালয়ের নেই। কাজেই এ বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবে।’

এদিকে কেন এমন কাণ্ড হলো তার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ওই নমুনাগুলো মহাখালীর নির্ধারিত সেন্টার থেকে সংগ্রহ করা হলেও তা পরীক্ষার জন্য ভাগ করে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট তিনটি ল্যাবে। এর মধ্যে শুক্রবারের ৪০২টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন সায়েন্সেস অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে। কিন্তু গতকাল সকাল থেকে ওই সেন্টারে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবক মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানরা সরকারি নিয়োগের দাবিতে কাজ বন্ধ করে আমরণ অনশন শুরু করেন প্রতিষ্ঠানটিতে। ফলে সেখানে কোনো টেস্ট হয়নি।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন সায়েন্সেস অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান তুষা বলেন, ‘শুক্রবারের নমুনার ভেতর আমাদের কাছে ৪০২টি নমুনা আসে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের রিপোর্ট দেওয়ার কথা। শনিবার সকাল থেকে আমাদের এখানকার স্বেচ্ছাসেবক টেকনোলজিস্টরা কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে যাওয়ায় দ্রুত আমি আমার এখানকার অন্য স্থায়ী টেকনোলজিস্ট ও কর্মরত ডাক্তারদের দিয়ে পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করি। সন্ধ্যা ৬টার আগেই নির্দিষ্ট সার্ভারে রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশগামীদের জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া ছিল। এ ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা হাতে রেখে টিকিট কনফার্ম করায় এক ধরনের ঝুঁকি থেকে যায়। তার পরও আমরা দ্রুত কাজ শেষ করে সিভিল এভিয়েশনে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি।’

এদিকে আন্দোলনকারী মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা জানান, গত মার্চ থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন সায়েন্সেস অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে করোনা পরীক্ষার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন ৫৫ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ডিপ্লোমাধারী। এর মধ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবক টেকনোলজিস্টদের মধ্য থেকে প্রথম দফায় ১৮৫ জন, পরে আরো ৫৭ জনকে সরকারি নিয়োগ দিলেও তাঁদের একজনকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে তাঁরা সংক্ষুব্ধ হয়ে নিয়োগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

দূরপ্রাচ্যে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা (পর্ব ২) – জাপানে বাংলাদেশি নারী গবেষকদের সুযোগ ও সম্ভাবনা

২৫ জুলাই, শনিবার – জাপান : রাত ১০.৩০ | বাংলাদেশ সময় : সন্ধ্যা ৭.৩০ টা সঞ্চালনায় : ড. নবীউল ইসলাম রবিন, সহকারী অধ্যাপক (নিউরোসায়েন্স), ইয়ামাগুচি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয় :ওমর ফারুক হিমেল আলোচক : ড. হুসনা আরা নাজনীন, পোস্ট ডক্টরাল গবেষক, গিফু বিশ্ববিদ্যালয়ড. শারমিন আকতার, পোস্ট ডক্টরাল গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়সালমা আল-আমিরাহ, মাস্টার্স শিক্ষার্থী, ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান

Posted by AkashJatra on Saturday, July 25, 2020

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!