মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখা
ডেটলাইন ৪ আগস্ট (মঙ্গলবার)। সময় বিকাল ৬:০৭ মিনিট। হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো কেপে ওঠে লেবাননের রাজধানী বৈরুত!
ভূমিকম্পের মতো ঝাঁকুনিতে মনে হচ্ছিল কান ফেটেঁ গেছে।
না না ভূমিকম্প নয়, পোর্ট অব বৈরুতে বা বৈরুতে বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিভাবে, কেন হয়েছে তা জানা নেই।
কালো ধোয়ায় অন্ধকার পুরো শহর, মহুর্তেই লন্ড ভন্ড দুই কি:মি: এলাকা, পাখি ডানা মেলে আকাশে উড়ার মতো তরতাজা মানুষের খণ্ড বিখখণ্ড দেহ যেন বাতাসে উড়ছে।
কি অদ্ভুত দৃশ্য মনে হয়নি, কখনো পৃথিবী এমন দৃশ্য দেখেছে! মহুর্তেই আশে পাশের দশ কি:মি: এলাকার সকল বাসা বাড়ির গ্লাস বৃষ্টির মতো পড়তে লাগলো। চারদিকে মানুষের আহাজারি, আর্তনাদ।
সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না বৈরুত বন্দর এলাকায় বসবাস করা বাসিন্দা ও কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা। মৃত্যু খুব কাছ থেকে দেখার পর শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন ক্ষত।
‘মাথায় কাছ ভেঙে পড়ে, এবং গ্লাসের আঘাতে হাত কেটে যায় হুস যেন নেই কারো কে কাকে নিয়ে দৌড়াচ্ছে কেউ জানে না।’
‘রাস্তার চার পাশে পড়ে আছে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন নিথর দেহ,
‘অজ্ঞানের হয়ে পড়ে আছে হাজারো মানুষ। নিস্তব্ধ আহাজারি রক্তে মাখা হাজারো মানুষ মনে হচ্ছে বাগানে লাল গোলাপ ফুটেছে।
লণ্ডভণ্ড জীবন ‘অনেক কষ্ট অনেক যন্ত্রণা,
ছোট ছোট শিশুর রক্তে ভেজা নিথর দেহ পড়ে আছে, কি নিস্তব্ধ কান্না, স্বজন হারানোর বেদনা যেন ইসারায় বুঝাচ্ছে।।
এই ক্ষত নিয়েই হাসপাতালে দৌড়াচ্ছে একজন আরেকজনের খোঁজ নিতে।
কখনো কি ভুলতে পারবে সেই দিনের ঘটনা কারো জানা নেই।
খালি চোখে তাকিয়ে দেখলে মনে হবে সেই স্হানটি যেন আজ বিষন্ন এক মরুভুমির উপর সাজানো সাদা বকের মেলা।।
হে বিশ্ব তাদের শোকে আজ তুমি শোকাহত।
স্বজন হারা মানুষের, সন্তান হারা মায়ের শোক সইবার শক্তি যেন পায় এই ঘটনার শিকার নিরীহ মানুষগুলো।
পাশে থেকো হে জাতিকূল, জেগে উঠো বিশ্বে যেন আর না হয় কখনো এর পুনরাবৃত্তি।
লেখক : লেবানন প্রবাসী