মিশরে ফেরাউনদের সংস্কৃতি ‘শাম এল ন্যাসিম’ উদযাপন
হাজার বছরের লালিত ফেরাউনিক ঐতিহ্য ঋতুরাজ ‘শাম এল ন্যাসিম’ (বাতাসে সুগ্রান) উৎসব এসে হানা দিলো মিশরের ঘরে ঘরে। মুসলিম ও খৃষ্টান ধর্মে বিশ্বাসী সবাই উৎসবটি এক সঙ্গে উদযাপন করে। প্রাচীন মিশরীয়রা খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০ থেকে এ দিনে শাম এল ন্যাসিম উৎসব উদযাপন করত।
রাজধানী কায়রোয় অবস্থিত গিজা’র দ্য গ্রেট পিরমিডের সঙ্গে সূর্য কিরণের পরিমাপ করে প্রতি বছর দিনটির সঠিক তারিখ নির্ধারণ হয়ে থাকে যা সাধারণত কপটিক অর্থোডক্সদের ইস্টার সানডের পরের সোমবার হয়ে থাকে। এদিনে মিশরে দিন এবং রাতের দৈর্ঘ্য সমান।
দিবসটি উপলক্ষে হেলিও পুলিস আন্তর্জাতিক পার্কে কায়রো সিটি গভর্নর মেজর জেনারেল খালেদ আবদেল-আল মিশরীয়দের সঙ্গে শাম এল ন্যাসিম উদযাপনে অংশ নেয় এবং শিশু-কিশোরদের মাঝে ফুল, মিষ্টি এবং খেলনা বিতরণ করেন।
উৎসবটি প্রাচীন মিশরীয়দের কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত। শাম এল ন্যাসিম নামটি প্রাচীন মিশরীয় ভাষা আফ্রাশিয়ান থেকে উদ্ভূত হয়ে কপটিক ভাষা থেকে এসেছে। যার মূল উচ্চারণটি হল ‘তশোম- নি -তশম’ যার অর্থ, উদ্যানের চারণভূমি।
এই উৎসবের কোনো ধর্মীয় পটভূমি নেই। শাম এল ন্যাসিম মিশরে বসন্তের সূচনা করে ইস্টার সানডের পরে আসে।
এ দিনে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে মিশরীয় পরিবারগুলো ফেশিখ/রিংগা মাছ ‘অনেকটা আমাদের লনা ইলিশ মতো’ পেঁয়াজ পাতা, লেটুস ও সিদ্ধ ডিম নিয়ে নীল নদের পাড়, চিড়িয়াখানা কিংবা বিভিন্ন উদ্যানে চলে যায়।
বাচ্চারা সেদ্ধ ডিমের ওপরে রঙিন অংকন করে থাকে ও পরে তা ভেঙে খায়। উদ্যানগুলোতে সারা দিন খেলাধুলা, আড্ডা ও সঙ্গে নেওয়া শাম এল ন্যাসিমের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘লবণাক্ত মাছ’ পেঁয়াজ পাতা, লেটুস ও সিদ্ধ ডিম খেয়ে ঘরে ফিরে সন্ধ্যার পর।
যদিও গত কয়েক বছর যাবত মিশরীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফাসিক ও রিংগা খেতে জনগণকে নিরুৎসাহিত করে আসছে। নোংরা পরিবেশে ফাসিক ও রিংগা তৈরি এবং প্রক্রিয়ারজাত ও বিক্রি করা প্রতি বছরেই শাম এল ন্যাসিমের পর কিছু মানুষ পেটের রোগে ভোগে এবং কখনও কখনও মৃত্যু ঘটে।
গত কয়েক বছর করোনা মহামারি ও রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলা খোলা আকাশের নিচে উৎসবটি উদযাপন করতে দেখা যায়নি। দেশটিতে এবার ইস্টার সানডে, শাম এল ন্যাসিম ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা চার দিনের সরকারি ছুটি।
সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ