ধর্মীয় উৎসব ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মিশরে উদযাপিত হয়েছে মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। নীলনদ ও পিরামিডের দেশটির বিভিন্ন শহর এবং গ্রামে ভোর থেকেই ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
আজ শুক্রবার (৬ জুন) ভোর ৬টা ২৩ মিনিটে কায়রোর বিখ্যাত আল-আজহার মসজিদ, জাতীয় মসজিদ ইমাম হোসাইন, আমর ইবনুল আস, সাঈদা জয়নবসহ সব মসজিদ ও মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নেন দেশটির নাগরিক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
মিশরের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ফজরের নামাজ শেষে মুসল্লিরা “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু…” ধ্বনিতে ঈদগাহ বা মসজিদে আসতে থাকেন। ঈদের জামাত শুরু হয় সূর্যোদয়ের ২০ মিনিট পর। ঈদের নামাজে প্রথম রাকাতে ৭ তাকবির ও দ্বিতীয় রাকাতে ৫ তাকবির দেওয়া হয়। নামাজ শেষে সংক্ষিপ্ত খুতবা হয়। তবে বেশিরভাগ মুসল্লিকে খুতবা শোনা ছাড়াই মাঠ ত্যাগ করতে দেখা যায়।
মিশরের মুসল্লিরা শাফি মাজহাব অনুসরণ করেন। তারা ঈদের নামাজের পর ইমামের সঙ্গে হাত তুলে মোনাজাত করেন না এবং বাংলাদেশের মতো কোলাকুলির রেওয়াজও এখানে দেখা যায় না।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা সাধারণত পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে একত্রে ঈদের নামাজ আদায় করেন। অনেকেই রাজধানী কায়রোর বড় মসজিদগুলোতে নামাজ পড়তে আসেন।
এবারের ঈদে বাংলাদেশের কয়েকটি মানবিক সংগঠন মিশরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য পশু কোরবানি করেছে। আলহাজ্ব শামসুল হক (আশ) ফাউন্ডেশন, ওয়ান ওয়ার্ল্ড উম্মা ফাউন্ডেশন, হাফেজ্জী হুজুর সেবা ফাউন্ডেশন, মাস্তুল ফাউন্ডেশনসহ মিশরে পড়ুয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মানবিক সংগঠনগুলোও এই উদ্যোগে অংশ নেয়। তারা উট, গরু, দুম্বা ও ছাগল কোরবানি করে মাংস বিতরণ করে।
ঈদের নামাজের পর থেকেই শহরের অলিগলিতে কসাইদের হাঁকডাক শুরু হয়। “গাজ্জার গাজ্জার” বলে তারা কোরবানির পশু জবাইয়ের সেবা দেন। একটি খাসি বা দুম্বা জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কেটে দেওয়ার পারিশ্রমিক বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২,৫০০ টাকা। গরু বা উটের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৫,০০০ টাকা।
এদেশের অনেক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং বিত্তশালীরা ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পাশাপাশি আলাদা করে মাংস কিনে গরিবদের মাঝে বিতরণ করেন। ঈদের দিনে দেখা-সাক্ষাতে সবাই পরস্পরকে বলেন—”কুল্লু সানা ওয়া আনতা তইয়িব”, যার অর্থ—“পুরো বছর ভালো কাটুক আপনার”।
সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ