মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে ১৩ শতাংশ

মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। ২০২৫ সালের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৭৮ জন বিদেশি শ্রমিক সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, যা গত বছরের একই সময়ে নিবন্ধিত ২৪ লাখ ৫২ হাজার ১০ জনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী দাতুক সেরি আবদুল রহমান মোহাম্মদ সোমবার পার্লামেন্টের দিওয়ান রায়াতে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই পতন সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল, যা দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে বিদেশি শ্রমিকের উপর নির্ভরতা হ্রাস করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী—বিভিন্ন খাতে শ্রমিকের বণ্টন, উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) খাতে ৬ লাখ ২২ হাজার ৩৮৮ জন, নির্মাণ খাতে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮৪ জন, সেবা খাতে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৬০৭ জন, বাগান খাতে ২ লাখ ৬৩ হাজার ১৩১ জন, কৃষি খাতে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬২৮ জন, গৃহকর্মী (ডোমেস্টিক হেল্পার) ১ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫ জন, আর খনি ও পাথর খাতে মাত্র ৭৬৫ জন বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন।

Travelion – Mobile

তিনি জানান, বর্তমানে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের অনুমতি শুধু ছয়টি আনুষ্ঠানিক খাতে সীমিত—নির্মাণ, সেবা, বাগান, কৃষি, খনি ও পাথর উত্তোলন খাত। অনানুষ্ঠানিক খাতে শুধুমাত্র গৃহকর্মী নিয়োগের অনুমতি রয়েছে।

উপমন্ত্রী আবদুল রহমান আরও বলেন, দ্বাদশ মালয়েশিয়া পরিকল্পনা (১২এমপি) অনুযায়ী, জাতীয় কর্মশক্তির ১৫ শতাংশের বেশি বিদেশি শ্রমিক থাকবে না—এমন নীতি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে। ত্রয়োদশ মালয়েশিয়া পরিকল্পনা (১৩এমপি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫ শতাংশে সীমিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

Diamond-Cement-mobile

সরকার স্থানীয় নাগরিকদের, বিশেষ করে আধা–দক্ষ ও দক্ষ খাতে কর্মসংস্থানের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ১৮ মার্চ থেকে নতুন বিদেশি শ্রমিক কোটার অনুমোদন স্থগিতের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা,

২০২৬ সাল থেকে “মাল্টি-টিয়ার লেভি মেকানিজম” চালু করা, যা বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে অতিরিক্ত ফি আরোপের মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগকে উৎসাহিত করবে।

এছাড়া মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় দেশের প্রযুক্তিগত ও কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (TVET) কার্যক্রম আরও জোরদার করছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতায় এইচআরডি কর্প, ট্যালেন্টকর্প ও পারকেসো–এর মতো সংস্থার মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমশক্তিকে দক্ষতা বৃদ্ধি ও পুনঃদক্ষতা (upskilling ও reskilling) প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

উপমন্ত্রী বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হলো এমন একটি টেকসই শ্রমবাজার গড়ে তোলা, যেখানে স্থানীয় জনশক্তি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।”

এভিয়েশন, পর্যটন আর প্রবাসের সব খবর পেতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!