ভারতে ফ্লাইটের ‘১১এ’ সিট নিয়ে কাড়াকাড়ি!
নাজেহাল বিমান সংস্থা-ট্রাভেল এজেন্সি
ভারতের আমদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন একমাত্র যাত্রী—যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বিশ্বাসকুমার রমেশ। তিনি বসেছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার ১১এ সিটে—ইমার্জেন্সি এক্সিটের ঠিক পাশে। আর সেই মুহূর্ত থেকে এই নির্দিষ্ট আসনটি যেন হয়ে উঠেছে আশার প্রতীক। চারদিকে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে—“১১এ সিটটা কি ফাঁকা আছে?”
অদ্ভুত হলেও সত্য, এই আসনের চাহিদা হঠাৎ করেই আকাশছোঁয়া। ভারতের নানা প্রান্ত থেকে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ফোন রিং থামছেই না। অন্য সময় যেখানে ইমার্জেন্সি এক্সিটের সিটগুলো অতিরিক্ত চার্জ দিয়েও ফাঁকাই পড়ে থাকত, এখন যাত্রীরা এগুলো বুক করতে মরিয়া।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা জিতেন্দ্র সিং বাগ্গা যিনি শিগগিরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন, সাফ জানালেন— “ইমার্জেন্সি এক্সিটের ধারের সিট না হলে আমি যাব না। আর যদি ১১এ হয়, তাহলে যেকোনো দাম দিয়েই নেব!”
বারবার আকাশপথে যাতায়াত করা রাজেশ ভাগনানিও বললেন, “জানি, জীবন-মৃত্যু ভাগ্যের হাতে। কিন্তু যেখানে বাঁচার একটুখানি আশা থাকে, সেখানে বসতেই চাই। ১১এ থাকলে সেটাই আমার পছন্দ।”
ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া-র সদস্য অনিল পাঞ্জাবি জানালেন, “ইমার্জেন্সি এক্সিটের পাশের সিটের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। কেউ কেউ বলছেন, ১১এ চাই—সেটা দরজার পাশে হোক বা না হোক!”
ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া-র ইস্টার্ন রিজিয়নের চেয়ারম্যান অঞ্জনি ধানুকার মতে, “সবটাই বিশ্বাস আর মানসিক শান্তির বিষয়। মানুষ ১১এ-তে বসলেই যেন মনে করেন নিরাপদ।”
এখন শুধু অভ্যন্তরীণ উড়ান নয়, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও একই অবস্থা। লন্ডন, দুবাই বা সিঙ্গাপুরগামী যাত্রীদের আগাম আবদার— “আমার টিকিটে ১১এ থাকুক।”
বিশ্বাসকুমারের বেঁচে ফেরাকে অনেকে বলছেন “আশার আলো”। মানুষের মনে বসে গেছে, ১১এ মানে নিরাপদ যাত্রা।
যদিও বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “একটি নির্দিষ্ট আসন কখনোই সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। দুর্ঘটনার ধরন অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবু ১১এ নিয়ে বিশ্বাস যেটুকু জন্মেছে, তা মানুষের মনের আশা-ভরসা।”
সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ