নিউইয়র্কের দেয়ালে ‘রূপসী বাংলাদেশ’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকার ‘লিটল বাংলাদেশ’ এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে বাঙালি মালিকানাধীন তাজমহল পার্টি হলের সুপরিসর দেয়ালে স্থাপিত হলো একটি ম্যুরাল, যেখানে ধরা পড়েছে ‘রূপসী বাংলাদেশ’। ৩২ বাই ২০ ফুট দীর্ঘ এই ম্যুরালটির গড়েছেন প্রবাসীশিল্পী টিপু আলম।

অ্যাক্রেলিকে আঁকা ম্যুরালটির বিষয় একটি শাপলা ঝিল। টলটলে জলে তাজা একগুচ্ছ শাপলা। উপরজুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ শরতের আকাশ, তার রং হালকা নীল ও সাদা।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসের খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ

Travelion – Mobile

রবিবার (১৩ নভেম্বর) স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই কণ্ঠযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও কাদেরি কিবরিয়া বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্টজনদের নিয়ে ম্যুরালটি উদ্বোধন করেন।

ম্যুরালটির উদ্বোধন করে গান গেয়ে শোনান  বাংলাদেশের দুই  কিংবদন্তি শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও কাদেরি কিবরিয়া  ছবি: সংগৃহীত
ম্যুরালটির উদ্বোধন করে গান গেয়ে শোনান বাংলাদেশের দুই কিংবদন্তি শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও কাদেরি কিবরিয়া ছবি: সংগৃহীত
তাজমহল রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ মুরাদ বলেন, “চিত্রশিল্পী টিপু আলম অনেক দিন থেকেই আমাকে বলছিলেন দেয়ালটিকে কিছু একটা দিয়ে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য। কিন্তু আমি তা আমলে নেইনি। আমার হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি। অধিকন্তু তা সাদা রাখতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলাম। কিন্তু তার শেষ প্রস্তাব আর ফিরাতে পারিনি”।

“এটাই তো চাই, চোখের সামনে থাকবে দেশ, যেখানে আমার নাড়ি পোতা, নাড়ির টান”।

এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে উদ্যোক্তা এবং শিল্পী উভয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিংবদন্তি দুই শিল্পীসহ উদ্বোধনীতে কমিউনিটি বিশিষ্টজনেরা।

রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘যে ছবি আমরা বুকের ভেতর নিয়ে ঘুরি, এখন তা নিউইয়র্কের দেয়ালে। এ তো ঠিক যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।’

তিনি আরও বলেন, “বলা যেতে পারে দেয়ালচিত্রের বা ম্যুরালের মধ্যদিয়েই মানবসভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছে। তাই আমাদের সকলের গভীর ভালবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে বাংলাদেশের স্মৃতি হৃদয়পটে ভেসে উঠার সহায়ক এই ম্যূরালের প্রতি।”

নিউইয়র্কের  জ্যামাইকায় তাজমহল পার্টি হলের দেয়ালে বসানো ম্যুরালের সামনে এর শিল্পী টিপু আলম। ছবি: সংগৃহীত
নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় তাজমহল পার্টি হলের দেয়ালে বসানো ম্যুরালের সামনে এর শিল্পী টিপু আলম। ছবি: সংগৃহীত

অপর কণ্ঠযোদ্ধা কাদেরি কিবরিয়া বলেন, ‘এভাবে ফিতা কেটে ম্যূরালের উন্মোচন ঘটানো আমার জীবনে প্রথম। আজীবন তা স্মৃতি হয়ে থাকবে’।

উদ্বোধন পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক সংগঠক গোলাম সারোয়ার হারুনের ব্যবস্থাপনায় তাজমহল পার্টি হলে দুই কণ্ঠযোদ্ধা বাংলাদেশের গান পরিবেশন করেন। শুরুতেই রথীন্দ্রনাথ রায় শোনান, ‘আমার এ দেশ সব মানুষের’। কাদেরী কিবরিয়ার কণ্ঠে, ‘ও আমার দেশের মাটি’।

আরও পড়তে পারেন :
নিউইয়র্কে আরেকটি ‘লিটল বাংলাদেশ’
নিউইয়র্ক মাতলো লালন উৎসবে
নিউইয়র্কে মুগ্ধতা ছড়ালো নীলা জেরীনের ‘অষ্ট নায়িকা’
যুক্তরাষ্ট্রে উদীচীর ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
নিউইয়র্কে বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মাননা

যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র নিউইয়র্ক শহরে এটি হচ্ছে তৃতীয় ম্যুরাল। এর আগে জ্যাকসন হাইটসে ব্যস্ততম ৭৩ স্ট্রিটের একটি দেয়ালে জাতীয় স্মৃতিসোধ আঁকা হয়েছিল। সেটি এখন আর দেখা যায় না। দ্বিতীয় ম্যুরালটি হচ্ছে ব্রঙ্কসে এবং মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সকল অনুষ্ঠান সেই ম্যূরালের সামনে হচ্ছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!