চট্টগ্রামের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট— আজ কুয়েত ও কাল মদিনা
বুধবার (৩০ অক্টোবর) শুরু হয়েছে কুয়েত-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইট চলাচল, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইট। মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ আর হজযাত্রীদের যাতাযাত সহজ ও সাশ্রয়ী করতে এমন উদ্যােগ রাষ্ট্রায়ত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের মদিনায় সরাসরি ফ্লাইটের উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী । বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান ও বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) মোকাব্বির হোসেন অনুষ্ঠান উপস্থিত থাকবেন বলে বিমান সূত্রে জানিয়েছে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েতের মিসিলায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে কুয়েত-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ডিফেন্স এটাসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবু নাসের, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. হাফিজুল ইসলাম, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান, জিহুল ইসলাম, বাংলাদেশ কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ কামাল, বিমানের কাউন্টার স্টাফ মো. সালাহ উদ্দিন পলাশ ও শামসুল আলম তুহিনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম বলেন,’কুয়েত থেকে চট্টগ্রামে বিমানের কোনো সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় এতোদিন চরম ভোগান্তিতে ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রবাসীরা। বিমান চট্টগ্রামে সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে, এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সুসংবাদ। তবে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট সুবিধা সার্বক্ষণিক পেতে হলে আমাদেরকে বিমানে যাতায়াত করতে হবে।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ( তারিখ হিসেবে বুধবার) রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার (বিজি ১৪৪) উদ্বােধনী ফ্লাইটটি। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোঁছায়। এই ফ্লাইটে বিজেনেস শ্রেণীতে ৭ জন এবং ইকোনমি শ্রেণীতে ২৩৮ জন যাত্রী ছিলেন।
এখন থেকে সপ্তাহে একদিন প্রতি মঙ্গলবার কুয়েত-চট্টগ্রাম একমূখী রুটে সরাসরি যাতায়াত করবে বিমান বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দুপুর ১.১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে উড়াল দিবে চট্টগ্রাম-মদিনা রুটের প্রথম ফ্লাইট বিজি-১৩৭। ২৭১ আসনের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটিতে এ পর্যন্ত ২৬৫ জন যাত্রীর বুকিং নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন বিজেনেস শ্রেণীতে এবং বাকি ২৪৭ জন ইকোনমি শ্রেণীর যাত্রী।
ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকেল ৫.৩০ মিনিটে মদিনার প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে এবং সেখান স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম দিকে আবার রওনা দিয়ে শুক্রবার ভোর ৪.২৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছাবে।
সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার এই টাইম শিডিউলে চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করবে বিমান বাংলাদেশ।
দুই রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান খান আকাশযাত্রাকে বলেন, মদিনায় মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ পরিদর্শন, হজ ও ওমরাহ পালন করতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলাম প্রতি বছর সৌদি আরব যান। পাশাপাশি মদিনা ও কুয়েতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিপুলসংখ্যক প্রবাসী রয়েছেন। এই রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রেক্ষিতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আর প্রবাসীদের যাতায়াত আরো সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে নিঃসন্দেহে। তাদের আর ঢাকা হয়ে যাতায়াতের ভোগান্তি পড়তে ও সময় অপচয় হবে না।’
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সরওয়ার ই জামান বলেন,’চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর মধ্য দিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিমানবন্দরে গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের বিষয়। এর ধারাবাহিকতায় ‘ব্যস্ততম’র তালিকা যেতে আমাদের বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। পাশাপাশি আমাদেরও বড় সুযোগ হচ্ছে সক্ষমতা দেখানোর ও সবাের্চ্চ সেবা নিশ্চিত করার।’
চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট চালু হওয়াটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে চট্টগ্রাম চেম্বারের চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেরিতে হলেও এমন উদ্যােগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সরকার, বিমান মন্ত্রণালয় আর বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে। হজযাত্রী আর প্রবাসীদের ঢাকা কেন্দ্রিক যাতায়াতের চরম ভোগান্তি থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ মুক্তি পাচ্ছে সেটাই সবচেয়ে আনন্দের বিষয়।’
আগের খবর
কুয়েত-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইট