কাশ্মীর আতঙ্কের উপত্যকা নয়, ভূস্বর্গ….

এই সময় প্রতিবেদন

‘পৃথিবীর বুকে যদি কোথাও স্বর্গ থাকে, সেটা কাশ্মীরেই।’ নিজের রাজ্যের বর্ণনা দিয়ে মহম্মদ ইউসুফ থামতেই হাততালিতে ভরে গেল কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র।

শুক্রবার এখানেই শুরু হল ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ারের গ্রীষ্মকালীন সংস্করণ। এই পর্যটন মেলায় এ বার সহযোগী জম্মু ও কাশ্মীর। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতিথেয়তার কাছে হার মানবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আতঙ্ক। এই আশ্বাস দিয়েই এ রাজ্যের পর্যটকদের কাছে টানতে কলকাতায় হাজির সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

পরিস্থিতি সুবিধার নয়, কাজ করছে না মোবাইল। এই অভিযোগ শুনে হেসে ফেললেন ফারুখ মহম্মদ। বললেন, ‘মোবাইল বা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ বলে ভয় পাচ্ছেন? যাঁরা ১৫ বছর আগে আমাদের ওখানে গিয়েছিলেন, তাঁরাও তো সেই পরিষেবা পাননি। তাঁদের কি অসুবিধা হয়েছিল? আপনারও হবে না। ফোনের ক্যামেরা তো কাজ করবে। মন ভরে ছবি তুলবেন। নিরাপত্তার গ্যারান্টি আমার।’

Travelion – Mobile

‘ধসে, বরফে গাড়ি আটকেছে। তাতে একজন পর্যটকেরও কি ক্ষতি হয়েছে কাশ্মীরে এসে? কাশ্মীর ক্ষত-বিক্ষত, কিন্তু আমাদের ‘কাশ্মীরিয়ত’ এখনও অক্ষত। আপনার নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। নিজের বাড়িতে যত নিরাপদে থাকেন, কাশ্মীরে ততটাই নিরাপদে থাকবেন’, মন্তব্য মহম্মদ ইউসুফের।

তার পরও প্রশ্ন থাকছে, এত সমস্যার মধ্যে কোন ভরসায় কাশ্মীরে যাবেন পর্যটকরা? এই প্রশ্নের উত্তরে কাশ্মীরিদের আতিথেয়তাকেই তুলে ধরছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশা পর্যটকরা আসতে শুরু করলে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও স্বাভাবিক হবে।

দেখা যাক আথিতেয়তা পর্যটকদের মন জয় করতে পারে কী না ?

এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে ফের কাশ্মীর বেড়ানোর বুকিং শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার শুরু হওয়ায় এই মেলাকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন কাশ্মীরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কাশ্মীর যে আতঙ্কের উপত্যকা নয়, ভূস্বর্গ—সেটাই প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছেন তাঁরা। পর্যটনের বিকাশে চেষ্টা চালাচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীর পর্যটন দপ্তরও। বেড়াতে গিয়ে পর্যটকরা যাতে কোনও ভাবে অসুবিধায় না পড়েন তার জন্য দপ্তরের যে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে, তার প্রচারও শুরু হয়েছে।

ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের (ট্যাব) সভাপতি বাচ্চু চৌধুরী কাশ্মীরের পর্যটন নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন ‘ওঁদের কাছে বাংলা এবং কলকাতা বিশেষ গুরুত্ব পায়। কারণ, কাশ্মীরে যত ভারতীয় বেড়াতে যান, তাঁদের মধ্যে বাঙালিরা গুজরাটিদের পরেই। গত বছর প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বাঙালি কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছেন।’

‘কাশ্মীর কি কলি’ থেকে শুরু করে ‘মিশন কাশ্মীর’, ‘মেরে সনম’ থেকে ‘হায়দর’। রোম্যান্স হোক বা উগ্রপন্থা, গল্পের পটভূমি কাশ্মীর হলেই যেন সিনেমা অর্ধেক হিট। এত দিন সিনেমার প্রসঙ্গ তুলে ভূস্বর্গের বিজ্ঞাপন দিতেন সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সেই কৌশলে বদল এসেছে। এখন তাঁদের পুঁজি আতিথেয়তা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!