করোনার প্রভাবে ৫০ ভাগ পর্যটক কমবে থাইল্যান্ডে
চীনের পর করোনা কোভিড ১৯ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকায় আছে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য থাইল্যান্ড। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এই দেশটির পর্যটন শিল্প পড়েছে হুমকির মুখে, কমেছে এভিয়েশন খাতের কার্যক্রম।
দেশটির প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে কমেছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আগমনের সংখ্যা, বাতিল হচ্ছে হোটেল-রিসোর্ট বুকিং আর ট্যু প্যাকেজ । ভরা পর্যটন মওসুমে থাইল্যান্ডের শপিং মল আর ফুটপাত বাজারগুলো অনেকটা ফাঁকা। পর্যটক যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। ফুটপাতের তার সর্বাধিক বিক্রিত পন্যেহুলোরগুলির মধ্যে এখন ডিসপোজেবল ফেস মাস্কগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা স্যুভিয়িনর বিক্রয়কে ছাড়িয়ে গেছে।
পর্যটক কমে যাওয়ায় সবচেয়ে কষ্টে আছেন চুক্তি ভিত্তিক ট্যুর গাইডরা। বেশিরভাগই বেকার এখন। গত সপ্তাহে ফুকেটে পেশাদার গাইড সমিতি সতর্ক করেছিল যে ৩ হাজার গাইড কাজের বাইরে রয়েছে এবং তাদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
পর্যটনে সমৃদ্ধ দেশটির এই শিল্প নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেছেন পর্যটন ও ক্রীড়া মন্ত্রী ফিপাট রাচকিতপ্রকারান । তাঁর ধারণা অনুযায়ী, করোভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০২০ সালের প্রথমার্ধে থাইল্যান্ডে পর্যটনের সংখ্যা ৫০ শতাংশে নেমে আসবে।
পপর্যটক হারানোর কারণে এই শিল্পের সাথে যারা যুক্ত আছে তাদের প্রত্যেকেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মন্ত্রী আশংখা।
গতকাল সরকারি বেসরকারি পর্যায়ের একটি যৌথ সভায় মন্ত্রী এই দুঃসবাদ তুলে ধরেন। মূলত এই সংকট থেকে পর্যটন খাতের ক্ষতিকে কমিয়ে আনতে সভাটির আয়োজন করা হয়।
এই সপ্তাহে থাই সরকার সংকট মোকাবেলার জন্য বেশ কিছু প্রণোদনা আর পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। এরমধ্যে আছে পর্যটন খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ প্রদান, কর প্রণোদনা এবং আয়ের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে জানান পর্যটনমন্ত্রী ।
তিনি বলেন, “নতুন বুকিং কমে যাওয়া এবং পুরনো বুকিং একে একে বাতিল হওয়া এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে যেটি মার্চ পর্যন্ত কোন ইতিবাচক ঈঙ্গিত বহন করছে না। চীন হয়ে কিবা যেসব দেশে ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেসব দেশ যেহেতু থাইল্যান্ডে আসার ট্রানজিট সেহেতু ভ্রমণ বাতিলের ধুম পড়েছে। এর কারণে প্রভাব পড়েছে জরুরী সভা, কনফারেন্স বা বিবাহের মত কার্যক্রমে।
“রিসর্ট ও হোটেলগুলো তাদের খরচ কমিয়ে আনার জন্য তৎপর হয়েছে। একেবারে প্রয়োজনীয় না হলে বন্ধ আছে নতুন নিয়োগে এবং ব্যবস্থাপনা খরচ কমাতে অনেক রিসোর্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ”, তিনি যোগ করেন।
“গত মাসটা খুব মন্দায় গেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত ছয় মাস ধরে ব্যবসায়ে কিছুটা মন্দা গেলেও বড় ধরনের ধাক্কাটা এসেছে গেল মাসে। ১ ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটক সংখ্যা কমেছে ৪৩.৫ শতাংশ যার মধ্যে ৪৩.৫ ভাগই চীনা পর্যটক।”
তিনি সবশেষে বলেন “থাইল্যান্ডের পর্যটন খাতের প্রথমার্ধের এই ক্ষতি কর্তৃপক্ষকে শেষ ছয় মাসে পুষিয়ে নিতে হবে।”
গত বছর ১১ মিলিয়ন চীনা পর্যটক থাইল্যান্ড সফর করেছিল , যা এই বছর ২ মিলিয়ন কমে যাবে বলে আশংখা করা হচ্ছে।