ওমানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, দেশটির প্রায় ৫০ শতাংশ নাগরিকই বংশগত রক্তরোগ আলফা অথবা বিটা থ্যালাসেমিয়া-র বাহক। এ অবস্থায় সচেতনতা, পরীক্ষা এবং আগাম সতর্কতা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
এই পরিসংখ্যানের প্রেক্ষিতে, মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ধরনের রোগ প্রতিরোধে সময়মতো মেডিকেল পরীক্ষা ও জেনেটিক কাউন্সেলিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে বিবাহের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে রোগটির ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। এসব পরীক্ষা ওমানের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সহজলভ্য এবং সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, “সময়মতো পরীক্ষা ও জেনেটিক কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এটি একটি দায়িত্বশীল পরিবার পরিকল্পনার অংশ।”
থ্যালাসেমিয়া মূলত হিমোগ্লোবিন নামক রক্তে থাকা প্রোটিনের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে, যা শরীরে অক্সিজেন বহনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যাধিটি নীরব ঘাতকের মতো এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চলে যেতে পারে।
ওমানের আল বাতিনাহ উত্তর, মাস্কাট ও আদ দাখিলিয়াহ অঞ্চলে তুলনামূলক বেশি দেখা যায় থ্যালাসেমিয়া।
বিশ্বব্যাপী ভূমধ্যসাগরীয়, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া—এই অঞ্চলগুলোতে থ্যালাসেমিয়ার প্রকোপ বেশি, যার ফলে এটি “ভূমধ্যসাগরীয় রক্তাল্পতা” নামেও পরিচিত।
যারা বিটা-থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, তাদের অধিকাংশই ছোটবেলাতেই লক্ষণ প্রকাশ পায়—নিরব দুর্বলতা, রক্তাল্পতা, বৃদ্ধি বিলম্ব এবং নিয়মিত রক্তদানের প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই একমাত্র চিকিৎসা হল অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন, যা ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য।
অন্যদিকে, আলফা-থ্যালাসেমিয়া আরও জটিল, যার তীব্রতা নির্ভর করে অনুপস্থিত জিনের সংখ্যার ওপর। এক বা দুইটি জিন না থাকলে তেমন লক্ষণ না-ও দেখা দিতে পারে, কিন্তু চারটি জিন অনুপস্থিত হলে গর্ভেই শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নাগরিকদের থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিতভাবে নানা উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে।
সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ