আল-আযহারে বাংলাদেশি গবেষকের কৃতিত্ব: এমফিলে সর্বোচ্চ ফলাফল

মিশরের বিশ্বখ্যাত আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ ফলাফল নিয়ে এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন বাংলাদেশি গবেষক মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন বিন মুহাম্মদ মকবুল আহমাদ। তিনি মিশরের আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ-এর সাবেক সভাপতি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ ও আইন অনুষদের গবেষক মুহাম্মাদ ইকবালের গবেষণার বিষয় ছিল— “ইসলামিক ব্যাংকের সামাজিক ভূমিকার ব্যত্যয়: এর বাস্তব প্রয়োগ ও শরয়ি বিধান।”

এমফিল থিসিসের ডিসকাশন সেমিনারে অধ্যাপকরা গবেষণার মান, উপস্থাপনা ও মৌলিকত্বে পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গবেষক মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন-কে সর্বোচ্চ ফলাফল “মুমতাজ (Excellent)” গ্রেডে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন।

Travelion – Mobile

শরিয়াহ ও আইন অনুষদের “মরহুম মুহাম্মদ ফুয়াদ মুহাম্মদ আল-নাদী” হলে আল-আযহারের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সেমিনারে থিসিসির উপর ৩ ঘন্টা ব্যাপী প্রাণবন্ত আলোচনার পর এ ফলাফল আসে।

মিশরের আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ-এর কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে গবেষককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
মিশরের আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ-এর কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে গবেষককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

সেমিনারে মুনাকিশ দাখিলী ছিলেন অধ্যাপক ড. মুরাদ মাহমুদ হাসান হাইদার,এবং মুনাকিশ খারিজি ছিলেন অধ্যাপক ড. হুসাইন মুহাম্মদ বাইয়ুমি আশ-শাইখ। প্রধান সুপারভাইজার (মুশরিফ আসলী) দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ড. মাহমুদ জামাল মুহাম্মদ আবদুল মাকসুদ, এবং সহকারী সুপারভাইজার (মুশরিফ মুশারিক) ছিলেন অধ্যাপক ড. মাহমুদ আফিফি আফিফি।

Diamond-Cement-mobile

অনুভূতিতে জানাতে গিয়ে ইকবাল বলেন, “এই সাফল্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ। সেমিনারে শিক্ষক ও সহপাঠীদের উপস্থিতি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। ”

মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইনের এই কৃতিত্বে আল-আযহারে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গভীর আনন্দ ও গর্ব প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বিশ্বাস, ইসলামি ব্যাংকিং বিষয়ে তাঁর এই গবেষণা বাংলাদেশসহ পুরো মুসলিম বিশ্বে ইসলামি অর্থনীতি চর্চায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

সেমিনারে আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।

মিশরের আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ তাঁর এই গৌরবময় সাফল্যের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানায় এবং তাঁর ভবিষ্যৎ জীবন ও কর্মে অফুরন্ত বরকত কামনা করে। অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বখ্যাত জ্ঞানপীঠে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে গবেষক মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও গোটা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার হরশপুর গ্রামের সন্তান ইকবাল হুসাইন শুরু থেকেই ছিলেন মেধাবী ও পরিশ্রমী। ২০১০ সালে রতনপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা থেকে আলিম এবং ২০১২ সালে ঢালকানগরের বাইতুল উলূম মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন। একই বছরের নভেম্বরে উচ্চশিক্ষার জন্য মিশরে পাড়ি জমান।

২০১৩ সালে আল-আযহারের মা‘হাদে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। ২০১৭ সালে অনার্স ও ২০১৯ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তাঁর অসাধারণ ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে পবিত্র হজ পালন করার সুযোগ দেয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!